এই যে আপনি। এখানে। এখনই আছেন। কম্পিউটার পর্দার দিকে তাকিয়ে আছেন। আরেকটি সেকেন্ড চলে গেল। জীবনের আরেকটি মুহূর্ত চলে গেল। কাছে নিয়ে দেখুন। এটা চলে গিয়েছে। ওহ্। আরও একটি চলে গেল। সেকেন্ড এবং মিনিটগুলো এভাবেই চলে যাচ্ছে। একটি ঘন্টাও চলে যায়। একটি দিনও চলে যায়। একটি বছর চলে যায়। আর আজটাও চলে গেল। কালটাও চলে যাবে।
এই তো আপনি। এই পৃথিবীর কোথাও না কোথাও রয়েছেন। আপনি এখন... কী চিন্তা করছেন? কিছুই না? নাকি এমন কিছু যে, ‘‘আমি আরও কিছু চাই’’?
হ্যাঁম কিন্তু আরও কি চান? বন্ধু? অনুষ্ঠান? প্রেম দিন? অর্থ? ভ্রমণ? কাপড়-চোপড়?
মনে রাখবেন যে আপনি যেটা চান আর যখন সেটা পেয়ে যান, বা অবশেষে এমন কারও সাথে প্রেমের সময় কাটাতে পারেন যার সাথে আপনি অনেক আগের থেকেই এমন সময় কাটাতে চাচ্ছিলেন...এর পরবর্তী সময়ে আপনার অনুভূতিটি কেমন হয়? এটা কিছু এমন হয় না যে,‘‘ আমি যেমনটি ভেবেছিলাম এটা আমার জীবনে তেমন আমূল পরিবর্তন করতে পারে নি’’?
তাহলে আপনি কী করবেন? আবার সেই ছবি আঁকার বোর্ডের সামনে ফিরে যাবেন?
হয়ত এই অভিজ্ঞতা বা আপনি যেটার আশা করছিলেন সেটা যে আপনি সত্যিই খুঁজছিলেন তা নয়। অথবা আপনার হয়ত শুধু সেই অভিজ্ঞতা বা বিষয়টির আরও কিছু চাওয়া বাকী রয়ে গেছে। আরও অর্থ। আরও ভ্রমণ। আরও প্রেমের দিন। আরও অনুষ্ঠান।
কিন্তু এর পরই আপনার সেই অনুভূতিটা চলে যায়, আবারও সেই চিন্তাটা জ্বালাতন করে যে: ‘‘আমি আরও কিছু চাই।’’
তো আপনি আরও কিছু চান। কোন কিছু থেকে আরও কিছু পেতে চান। কিন্তু আপনি ঠিক নিশ্চিত নন যে আসলে আপনি কি চান। এটা আপনার জীবনে অনবরত জ্বালাতন করছে। এমন একটা অনুভূতি যেটা বলছে যে কিছু একটার ঘাটতি রয়ে গেছে। এমন একটি অনুভূতি যেখানে জীবনে আরও কিছু আছে এবং জীবনে আরও কিছু বাকী আছে। জীবনে আরও কিছু পেতে হবে।
আপনি ভাবছেন যে,‘‘আমি কি কোন বর্গাকার গর্তের একটি গোলাকার খুঁটি? বিষয়টি আসলে কী? আমার সমস্যাটি কি?’’ এই জ্বালাতন থেকেই যায়। আর আপনি এতদিন পর্যন্ত যা অভিজ্ঞতা লাভ করেছেন সেগুলোর কোনকিছুই এই জ্বালাতন বন্ধ করতে পারে নি।
অবশ্যই, এটা বন্ধুদেরকে বলার মত বিষয় নয়। যদি তারা জানে যে আপনার চিন্তাভাবনা এমন তাহলে, নিশ্চয়ই তারা বলবে, ‘‘দেখ... সে জীবনকে নিয়ে বেশ গুরুতর চিন্তা করছে।’’
কিন্তু তাদেরও হয়ত এই একই জ্বালাতন হচ্ছে। হয়ত আপনার মত তাদেরও একই চিন্তা আসছে। হতে পারে সকলেই নীরবতার চক্রান্তের মধ্যে আছে: ‘‘আমি আমার জীবন সম্পর্কে যা ভাবছি সেটা আমি অন্য কাউকে জানতে দিতে চাই না।’’
আপনি কি কখনও এই জ্বালাতনকে ঈশ্বরের সাথে সম্পর্কযুক্ত করেছেন? অবশ্যই, ঈশ্বর আমাদের আশেপাশেই আছেন, যিনি অদৃশ্যভাবে আমাদের সকল কাজই দেখছেন। কিন্তু ঈশ্বর আমাদের নিজের জগতের উপরেও আছেন। আর এটাই হয়ত উভয়সঙ্কট। এই জ্বালাতন দূর করার জন্য আমাদেরকে নিজেদের জগতকে অতিক্রম করতে হবে।
ঈশ্বর যদি আমাদের এই জীবনটাকে আগের থেকে এমনভাবে সাজিয়ে রাখেন যে আমাদের এই জগতের কোন কিছুই আমাদেরকে সম্পূর্ণভাবে পরিতৃপ্ত করতে পারবে না, তাহলে কেমন হবে? এমনকি ভাল বিষয়গুলো যেমন সফল পেশা, একটি স্বাস্থ্যকর ঘরোয়া জীবন, যাকে আপনি সত্যিই ভালবাসেন তাকে বিয়ে করতে পারা। এমনকি হতে পারে যে এগুলোর মধ্যেও শূন্যতা রয়েছে। হতে পারে যে এগুলো সেই জ্বালাতনকে নেভাতে পারে না। কেন? কারণ এইসবকিছু এই জগতের। আর কারণ হল আমাদের জীবনের পূর্ণতা লাভের জন্য আমাদেরকে এই জগতের বাইরের কিছু পেতে হবে।
সম্ভবত ঈশ্বর আমাদেরকে যেমনভাবে তৈরী করেছেন যাতে আমরা তাঁর অনুসন্ধান করি।
এই বিষয়ে একটু ভেবে দেখুন। এখনই। বেশি প্রয়োজনের বিষয়টি। বেশি চাওয়ার বিষয়টি। কিন্তু আপনি যে ‘‘বেশি’’ চাচ্ছেন সেটা যদি এই জগতে আপনি খুঁজে না পান তাহলে কী হবে? তারপর আসলে কি হবে? তখন আপনি কোথায় যাবেন?
আমাদের গভীরতম চাহিদা এবং আকাঙ্খাগুলো এই জগতের কোন কিছুর দ্বারা পূরণ করা যায় না। আমাদের ঈশ্বরকে প্রয়োজন, যিনি এই জগতের উর্ধ্বে, তিনিই আমাদেরকে চূড়ান্ত পরিতৃপ্তি দিতে পারেন। শুধুমাত্র ঈশ্বরের সাথে সম্পর্কই আমাদের আধ্যাত্নিক তৃষ্ণা মেটাতে পারে। আমাদের ‘‘জীবন জল’’ প্রয়োজন। আমাদের তাঁর সাথে সম্পর্ক স্থাপন এবং জানার প্রয়োজন রয়েছে। অন্যথায়, আমরা আমাদের জীবনে ‘‘তৃষ্ণার্ত’’ থেকে যাব। এখানে আধ্যাত্নিক অর্থে তৃষ্ণার্ততা বোঝানো হয়েছে।
এজন্যই যীশু বলেছেন, ‘‘আমি যে জল দেব, যে তা খাবে তার আর কখনও পিপাসা পাবে না।’’ তাঁকে জানতে পারলেই আমাদের তৃষ্ণা মিটবে। এটা আমাদের জ্বালাতন দূর করবে। এই জ্বালাতন অন্য কিছুর দ্বারা দূর হবে না।
লোকজন প্রায়ই তাদের নিজেদের আত্নিক চাহিদা পূরণ করার জন্য যেসকল বিষয় আধ্যাত্নিক নয় সেসব কিছু দ্বারা পূরণ করতে চায়—যেমন অর্থ, সুনাম, শারীরিকভাবে সুস্থ থাকা, দামি ও সুন্দর জিনিস থাকা।
অথবা তারা আত্নিক চাহিদা পূরণ করার জন্য এমন কিছু আধ্যাত্নিকতার মধ্য দিয়ে যায় যেটার মধ্যে ঈশ্বরের সাথে সম্পর্কের বিষয়টি থাকে।
যীশু নিজেই একমাত্র ‘‘সঠিকভাবে’’ নির্ভরযোগ্য। শুধুমাত্র তিনিই আমাদেরকে ‘‘জীবন জল’’ দিতে পারেন। এবং সেই জল হল একটি উপহার। আপনি কি এই উপহার গ্রহণ করতে চান? এটা এই মুহূর্তেই আপনার জীবনে বিশাল এক পার্থক্যের সৃষ্টি করবে।
► | কিভাবে ঈশ্বরের সাথে একটা সম্পর্ক শুরু করেন |
► | আমার একটি প্রশ্ন বা মন্তব্য আছে… |