তানিশা গেইনির লেখা
যখন আমি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে পাশ করেছি এবং কলেজে যাচ্ছিলাম, তখন আমি কখনই ভাবি নি যে আমি পতিতাবৃত্তিতে জড়িয়ে পড়ব। কিন্তু অবশেষে সেটাই বাস্তবে রূপ নিল।
আমি স্কুলে যাওয়া নিয়ে বেশ আগ্রহী ছিলাম কারণ এটি ঘরে বসে থাকা এবং সামাজিক কলেজে যাওয়ার চাইতে বেশ আকর্ষণীয় বলে মনে হয়েছিল। সেখানে থাকাকালীন সময়ে আমি কলেজের বেশকিছু ঘটনা উপভোগ করেছি: বিভিন্ন দলসমূহ, স্বাধীনতা এবং উচ্চতন শিক্ষার সুযোগ ছিল। কলেজে যাওয়া আমার জীবনের অন্যতম অর্জনগুলো মধ্যে একটি ছিল এবং সেখান থেকে স্নাতক পাশ করা অন্যতম একটি লক্ষ্য ছিল।
তবে সামনে যা হতে চলেছে সেজন্য আমি কোনভাবেই প্রস্তুত ছিলাম না। আমার প্রথম সেমিস্টারে আমি বুঝতে পারলাম যে আমি গর্ভবতী। আমার দ্বিতীয় সেমিস্টারে আমি প্রচুর পার্টি করতাম। তবে আমার তৃতীয় সেমিস্টারে আমি খুঁজে বের করলাম যে আমার আসলে তিনটি জিনিসের প্রয়োজন ছিল: অর্থ উপার্জন করা, ভাল ভাল জিনিস থাকা, এবং ‘‘খুশি’’ থাকা। স্থানীয় স্ট্রিপ ক্লাবে কর্মরত কয়েকজন লোকের সাথে কথা বলে আমি একজন আবেদনময়ী নৃত্যশিল্পী হওয়ার চিন্তা করলাম কারণ আমি আমার চাওয়া তিনটে জিনিসই এখান থেকে পাব।
সেই লোকদের মধ্যে একজনের বাবা স্ট্রিপ ক্লাবের মালিক ছিলেন। তিনি খুব দামি ও সুন্দর একটা বিএমডাব্লিউ চালাচ্ছিলেন এবং তার কাছে সর্বশেষ নতুন ইলেক্ট্রনিক জিনিস যেমন: সমতল পর্দার টিভি, শৈল্পিক কম্পিইটার, আমি যা যা চাইতাম সেগুলোর সবকিছুই তার কাছে ছিল। এটা দেখার জন্য আমি তাড়াতাড়ি ক্লাবে যাই। একবার যখন আমি সবকিছু দেখলাম এবং টাকা দিয়ে সেসব জিনিস কেনার চিন্তা করছিলাম তখন আমি বললাম,‘‘ আমি এগুলো পরখ করে দেখব।’’ কয়েক সপ্তাহ পর আমি এগুলো পেয়েও গেলাম। কিন্তু এটা শুধু একটা শূরু ছিল, কারণ আমি লোকদের সাথে গভীর থেকে গভীরতরভাবে কথা বলা চালিয়ে গেলাম কারণ এটাই আমাকে দ্রুত অর্থ উপার্জন করতে সাহায্য করবে। এটা শুরু করার পর পরই আমি ‘‘ সাক্ষাৎ কথোপকথন’’ শুরু করি যার মানে হল পতিতাবৃত্তি।
কিন্তু নয় মাস পর, যখন যীশু আমার জীবনে প্রবেশ করলেন তখন আমার জীবনে অপ্রত্যাশিত ১৮০ ডিগ্রি মোড় ঘুড়ল।
আমার একজন লোক আমার জন্য এককালীন কিস্তিতে একটি গাড়ি দেয়, কিন্তু সেই গাড়ির জন্য আমাকে অর্থের যোগান করতে হতো এবং ইনসুরেন্সের জন্য এককালীন বিনিয়োগ করতে হতো। আমি যখন আমার গাড়িতে করে ফিরছিলাম তখন মুক্তো রঙ্গের একটি গাড়ি আমার পাশে এসে দাঁড়াল। আমার থেকে প্রায় দ্বিগুণ বয়সী একজন শ্বেতাঙ্গ লোক সেই গাড়িতে ছিল। আমরা অল্প সময়ের জন্য কথা বললাম এবং সে আমাকে দুপুরে তার সাথে খাবার খেতে নিমন্ত্রণ করল।
আমি তার গাড়িতে উঠলাম এবং কোণার দিকে রাতের খাবার খাওয়ার জন্য বসলাম। আমরা কথা বললাম, হাসাহাসি করলাম, এবং খেলাম। খাওয়া শেষে সে আমাকে তার গীর্জার বুধবার রাতের বাইবেল অধ্যয়নের জন্য আমন্ত্রণ জানাল। আমার মনে হল আমি এইমাত্র নেশাজাতীয় দ্রব্য বিক্রির জন্য কোন গোয়েন্দা পুলিশের কাছে ধরা পড়েছি, কিন্তু আমি যাবার জন্য সম্মতি জানালাম। সেই রাতে গীর্জায় আমি এতদিন যা যা করেছি সেই বিষয়ে ঈশ্বর আমার কাছে কথা বলেন। আর আমি সবসময়ই কিছু না কিছু অযুহাত দেখাচ্ছিলাম যে, ‘‘ঈশ্বর আমার অন্তর জানেন। আমি একজন ভাল ব্যক্তি। আমারাও তো জীবিকা নির্বাহ করতে হয়।’’ কিন্তু আমি জানতাম যে আমি যা করেছি তা যথেষ্ট হয়েছে। আমি বেদির সামনে গেলাম এবং আমার জীবনকে যীশুর কাছে সমর্পন করলাম। এটা ছিল ২০০৩ সালের জুলাই মাস।
আমি যে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম সেটা নিয়ে আমি বেশ উৎসাহী ছিলাম এবং আমি আমার সকল বন্ধু এবং পরিবারের লোকদেরকে তা বলেছিলাম। যারা আমাকে তাদের সাথে সাক্ষাৎ করার জন্য ডাকত তাদেরকেও আমি এই কথা বলেছিলাম যে আমি আর সেই কাজ করি না কারণ এখন আমি একজন খ্রীষ্টিয়ান। আমি সেই গাড়িটির জন্য অর্থের যোগান করার জন্য নিজের সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি, কিন্তু আমি তা করতে ব্যর্থ হয়ে সেই ব্যাপারীর কাছে তা ফেরত দিয়ে দিয়েছি। আমি সেই স্ট্রিপ ক্লাবের সাথে সমস্ত যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছিলাম, আর সেজন্য আমি বেকার ছিলাম। আমি প্রত্যেকদিন বাইবেল অধ্যয়ন, প্রার্থনা করেছি এবং বিশ্বাস করেছি যে ঈশ্বর সমস্ত কিছুর ব্যবস্থা করবেন। আর ঘটনাতীতভাবে ঈশ্বর তা করেছেন।
আমি আমার বাড়ির পাশে স্থানীয় একটি সামাজিক কলেজে আবারও যাওয়া শুরু করলাম। আমি সেখানে একটি সেমিস্টার সম্পন্ন করলাম, কিন্তু আমার কোন গাড়ি না থাকার কারণে আমি আর বিদ্যায়তনে যেতে পারলাম না। কিন্তু আমি বিশ্বাস করতাম যে সামনে আরও ভাল দিন অপেক্ষা করছে এবং সবকিছু ঠিক হয়ে যাবে। ঈশ্বরের প্রতি নতুন বিশ্বাসী হওয়ার পরও আমি বিভ্রান্ত, হাতাশাগ্রস্ত এবং দুশ্চিন্তাগ্রস্থ ছিলাম। আমি বিভ্রান্ত ছিলাম কারণ আমি ভাবতাম যে আমি যদি শুধু প্রার্থনা করি এবং বিশ্বাস করি তাহলে সকল কিছু সুখকর হয়ে যাবে, কিন্তু আসলে বিষয়টা এমন ছিল না। আমি যেসব জিনিস প্রয়োজনীয় মনে করতাম সেসব জিনিস না পাওয়ার কারণে আমি আমার জীবনের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে হতাশগ্রস্থ ছিলাম। আর আমি দুশ্চিন্তাগ্রস্থ ছিলাম এই কারণে যে আমার পরিস্থিতিটা আগের মত স্বাভাবিকভাবে চলবে কিনা।
আগষ্ট মাসের প্রায় শেষের দিকে আমার কোন গাড়ি ছিল না আর তাই আমি কোন কলেজে ভর্তি হই নি। আমি আমার পরবর্তী শহরের একটি ডাইনিং হলে চাকরি পাই, তবে চাকরি ছেড়ে দেওয়ার কারণে বা আমার বেশ কয়েকমাস পরে একটা চাকরি পেতে বেশ কঠিন সময়ের মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে। আমি এই বিষয়ে আত্নবিশ্বাসী ছিলাম যে বিষয়গুলো আরও ভাল হতে যাচ্ছে তাই আমি গীর্জায় যাওয়া, বাক্য পড়া, প্রার্থনা এবং তাঁর উপর বিশ্বাস করা অনবরত রাখলাম।
পরের বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে আমি আমার মৃত ঠাকুমায়ের উত্তরাধিকার সূত্রে একটি চেক আমার ই-মেইলের মাধ্যমে পাই এতে করে আমি গাড়ি কিনে কলেজে যাবার জন্য সামর্থবান হলাম। ২০০৭ সালের মে মাসে আমি হিসাববিজ্ঞান নিয়ে বিজ্ঞানে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেছি। আমি এখন স্বাস্থ্যসেবা খাতে কাজ করছি এবং আমার গাড়ি বেশ ভালই চলছে।
আমি আমরা ব্যক্তিগত ঘটনার একটি বই প্রকাশ করেছি যার নাম হল , ১৯ জন পুরুষের চিঠি। কেউ একজন কীভাবে আমাকে সত্যিকারভাবে ভালবেসেছে।
আপনি কি বস্তুগত জিনিসের খোঁজ করছেন? আপনার বর্তমানের জীবনের জন্য কি আপনার কী বিরক্তি এসে গেছে? আপনার জীবনের দিকে তাকান। আপনি একে কীভাবে বর্ণনা করবেন? আকর্ষণীয়? হতাশাজনক? উদ্বিগ্ন? চাপের সম্মুখীন? সামনের দিকে চলমান? প্রতিসংহিত? উপরিউল্লিখিত বিষয়গুলো আমাদের অনেকের সাথেই সামঞ্জস্যপূর্ণ। আমরা অনেক কিছু করার স্বপ্ন দেখি যেগুলো একদিন বাস্তবায়িত হবে, আবার এমন কিছু বিষয় আছে যেগুলো আমারা ভুলতে চেয়েও ভুলতে পারি না। বাইবেল বলে, যীশু সবকিছু নতুন করতে এসেছিলেন। আপনি যদি আপনার জীবন পরিচ্ছন্নভাবে শুরু করতে পারতেন তাহলে কেমন হতো?
যদি আপনি আপনার জীবনে শান্তির খোঁজ করেন, তাহলে আপনার জীবনকে ভারসাম্যপূর্ণ করার জন্য একটি পথ আছে। কেউই নিখুঁত নন, বা কারোর জীবন-যাপনই নিখুঁত নয়। কিন্তু আমাদের প্রত্যেকেরই ঈশ্বরের সাথে তাঁর পুত্র, যীশু খ্রীষ্টের মধ্য দিয়ে ব্যক্তিগত সম্পর্ক গড়ে তোলার মাধ্যমে নিখুঁত আশীর্বাদ পাবার একটি সুযোগ রয়েছে।
তিনি আপনাকে ভালবাসেন এবং তাঁকে জানার জন্য আপনাকে স্বাগতম জানান। আপনার জীবনে যত ব্যর্থতাই থাকুক না কেন সেগুলোতে এর কিছুই আসে যায় না।যীশু আপনার পাপ নিজের ওপর তুলে নিয়েছেন, এবং এর জন্য তিনি ক্রুশে প্রার্থনাও করেছেন। এরপর তিনি মৃত্যু থেকে পুনরুত্থিত হয়েছেন। তিনি আপনাকেও তাঁর সাথে সম্পর্কের মাধ্যমে নতুন জন্ম দিতে পারেন…
আপনি প্রার্থনার মাধ্যমে খ্রীষ্টকে এখনই গ্রহণ করতে পারেন। প্রার্থনা হল ঈশ্বরের সাথে কথা বলা। ঈশ্বর আপনার অন্তরের ভাষা জানেন আর তিনি আপনার কথা নিয়ে উদ্বিগ্ন নন। এখানে পরামর্শমূলক একটি প্রার্থনা দেওয়া হল:
প্রভু যীশু, আমি তোমাকে ব্যক্তিগতভাবে জানতে চাই। আমার পাপের জন্য ক্রুশে মৃত্যুবরণ করার জন্য তোমাকে ধন্যবাদ। আমি আমার জীবনের দরজা তোমার কাছে খুলে দিলাম, তুমি আমার রক্ষাকারী এবং প্রভু হিসেবে আস। আমার জীবনকে নিয়ন্ত্রণ কর। আমার পাপ ক্ষমা এবং আমাকে অনন্ত জীবন দেওয়ার জন্য তোমাকে ধন্যবাদ। তুমি আমাকে যেমন অনুগ্রহের পাত্র হিসেবে দেখতে চাও সেভাবে আমাকে তৈরী কর।