×
অনুসন্ধান
EveryBengaliStudent.com
জীবন এবং ঈশ্বর বিষয়ক প্রশ্নগুলি
 আবিস্কার করার জন্য নিরাপদ স্থান
সম্পর্কগুলি

নীলচে নবম গল্প

আবেগজনিত কষ্ট, আত্নহত্যার চিন্তা, এবং কীভাবে সে এইসব কিছু থেকে মুক্তি পেল সে সম্পর্কে তার ব্যক্তিগত বিবরণ…

WhatsApp Share Facebook Share Twitter Share Share by Email More PDF

অজানা লেখক

কিছু মানুষ সুযোগ সন্ধানের জীবনের পথে সফল হয়। আমার মত অন্য যারা আছি, তারা জীবনের এই পথে, কিছু সম্পর্ক, আসক্তি অথবা বিশৃঙ্খলাপূর্ণ কোন ঘটনা যেগুলো আমরা কখনই চাই না সেগুলোর মাধ্যমে ভারসাম্যহীন হয়ে পড়ে।

উদাহরণ হিসেবে, আমি আমার প্রথম রোমান্সের রাতে মদের মধ্যে বেহুশ হবার একটি শক্তিশালী মিশ্রণ তৈরী করার মত একটি ভুল করেছিলাম। সেই ঘটনার সময় আমার শুধু মনে আছে একজন লোক আমার কাঁধ ঝাঁকিয়ে বলছিলেন তখন ঘরে যাওয়ার সময় হয়েছে।

আর তখন এমন একটি রাতে নকল পরিচয় পত্রের বিষয়ে বোকা একটি আলোচনা হয়েছিল, যেটা পঞ্চম বার টাকিলা নামক মদ পান করার পর হয়েছিল, এবং আমার সাথে তিনজন বান্ধবী ছিল। টিনা খুব তাড়াতাড়ি দুজন কেয়ার গিভার মাতালদের সাথে ঘনিষ্ঠ হল। বিশ মিনিট পর আমার গ্লাস খালি হয়ে গেল এবং আমরা যে ছায়াছবিটি দেখছিলাম সেটা হাস্যকর হয়ে উঠল। তারপর সবকিছু ঝাপসা হয়ে আসল আর তখনই আমি দ্রুত টয়লেটে গেলাম। ছায়াছবি শেষ হয়ে গেল কিন্তু আমি বাথরুম থেকে বের হলাম না। আমরা অবস্থা খারাপ হয়েই চলছিল। আমাকে নিয়ে যাওয়ার জন্য একটি ফোন করা হল। আমি সেই রাত থেকে সেখানে পাঁচ গ্যালনের একটি বালতিসহ তিন দিন পর্যন্ত ঘুমিয়ে ছিলাম।

ঘটনাসমূহ এবং ভুল সিদ্ধান্ত চলতেই থাকল। অনেক ছেলেরাই আমার নাম জানত এবং অনেক রাত কেটেছে যেগুলোর কথা আমি সকালে মনে করতে পারিনি। আমি অনেকগুলো সম্পর্কে জড়িয়েছিলাম দেখে আমার সেই বিষয়টি নিয়ে আনন্দিত বোধ করার কথা ছিল। কিন্তু আমার অন্তরে শূন্যতা ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছিল। আমার আকর্ষণগুলো আর আমাকে স্বাধীনতা, স্বাতন্ত্র্যতা, এবং তাৎপর্যপূর্ণতার আনন্দ দিচ্ছিল না। এমনকি, আমি বিপরীত আমার আনন্দের বিপরীত দিকগুলো অনুভব করছিলাম। আমি নিজের অবিরাম প্রয়োজনগুলোর মধ্যে আটকে পড়েছিলাম এবং হতাশার পুনরাবৃত্তির অনুভূতিতে জর্জরিত হয়ে পড়েছিলাম।

কলরাডোতে স্থানান্তর

জীবনের নতুন পথ খোঁজার উদ্দেশ্যে আমার ধনী প্রেমিক যার সাথে আমি থাকতাম তাকে নিয়ে কলোরাডেতে গেলাম। আমরা যাওয়ার পথে আমাদের বিয়ের পরিকল্পনাগুলো করছিলাম। আমি ভেবেছিলাম এই লোকটি সত্যিই আমাকে ভালবাসে। আমরা গত ছয় মাস যাবৎ ভ্রম উতপাদকারী ভেষজের অভিজ্ঞতার সাথে জীবন-যাপন করছিলাম। এখন কলোরাডোতে আমরা আমাদের সাধ্যের মধ্যে ছোট একটি বাড়ি খুঁজে পেলাম। কোন ঘরটি আমাদের গাঁজা খাওয়ার জন্য ব্যবহৃত হবে সেটা নিয়েই শুধুমাত্র আমাদের মধ্যে বিতর্ক চলছিল। আমি তাকে বাড়ির নিচে ছোট ঘরের কথা বললাম। কারণ আমি আইনগত কোন ঝামেলায় পড়তে চাচ্ছিলাম না।

রিচার্ড আমাকে প্রতিশ্রুতি দিল যে যদি আমি কোন কাজ করি এবং তাকে কলেজে ভর্তি হতে দেই তাহলে সে কলেজ পাশ করার পর আমার জন্যও এই একই কাজ করবে। আমি তার সাথে থাকার জন্য মরিয়া ছিলাম কারণ আমার নেশা করার জন্য সকল যোগাযোগ তার মধ্য দিয়ে হত।

মাত্র তিনমাসের মধ্যেই আমি রিচার্ডের দেওয়া নেশাজাতীয় দ্রব্য ছাড়া একদম চলতেই পারছিলাম না। সে আমাকে জীবনের এমন একটা অংশের সাথে পরিচয় করিয়ে দিল যেটার অভিজ্ঞতা আমি কখনই পাই নি এবং আমি সম্পূর্ণভাবে এর শক্তিতে চলার জন্য উগ্র হয়ে উঠেছিলাম। আমি সূর্যোদ্বয়কে প্রজাপতির মত দেখতে শুরু করলাম। আমরা কল্পনাশক্তি আরও জীবন্ত হয়ে উঠল, যেটা আমি যে হতাশায় ভুগছিলাম সেটা ঢেকে দিচ্ছিল।

নেশা যখন খারাপ কিছুতে পরিণত হল

কিন্তু যতই সময় যাচ্ছিল, আমার সচল কল্পনাশক্তি আমার মধ্যে শূন্যতা তৈরী করছিল। একদিন সন্ধ্যায় আমি যখন তার মায়ের বাড়ির বান্দায় বসে ছিলাম তখন এমনটি ঘটল। রাস্তার নির্ধারিত আলোগুলো ছাড়া পুরোটা রাস্তাই অন্ধকারাচ্ছন্ন ছিল। আমি একা ছিলাম, রিচার্ড ভেতরে ছিল, এবং প্রতিবেশীরা ঘুমাচ্ছিল।

রাস্তার অন্ধকার দিকটা এবং বাড়ির ছাড় থেকে একদল অন্ধকার তাদের ধারালো নখবিশিষ্ট এবং অট্টহাসি নিয়ে তাদের অবকাশকালীন কোন সময় কাটানোর জন্য উৎসুক ছিল। শয়তানের মত দেখতে সেই সঙ্গীরা প্রতিবেশীদের মধ্যে তা চালিয়ে যেতে লাগল। তারা আমাকে হয়ত খেয়াল করতে পারে এই ভেবে আমি মূর্তির মত স্থির হয়ে ছিলাম। ঠিক যখনই আমি আমার লুকানোর জায়গাটিতে যাব সেই মুহূর্তেই রিচার্ড বানান্দায় এসে পড়ল।

আমি রাস্তার দিকে বার বার দেখছিলাম এই ভেবে যে ওরা ওকে যাতে না দেখে। সেই রাতে আমি তাদের ভয়ংকর কার্যকলাপের খোঁজ করলাম কিন্তু কোথাও তাদের খুঁজে পেলাম না। রিচার্ড আমার মনোযোগে বাধার সৃষ্টি করল আর আমরা অনর্থক কথা বলতে শুরু করলাম। এই উত্তেজনায় আমার চিকন পা দুটো একটি আরেকটিকে স্পর্শ করছিল না, এমনভাবে আমি কাঁপছিলাম। আমি নিজেকে স্বাভাবিক করার চেষ্টা করছিলাম। নিজেকে এটা বলছিলাম যে আমি ঠিক আছি এবং আমি তখনও ভাল একটি সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছিলাম। চিকন মানুষের এরকম একটু হয়ে থাকে। পুরুষেরা এটা পছন্দ করে, তারা বলে যে এটা শুধুই একটা খারাপ ভ্রমণ ছিল।

কিন্তু এই যুক্তিটি সমস্ত ভাটা পড়া প্রশ্নের উত্তর দেয় নি। কেমন হবে যদি কোন ভ্রমণের শেষ না হয়? কেমন হবে পরবর্তীতে যদি তা চলে না যায়? কেমন হবে যদি আমি আপনার পরবর্তী হাসির পাত্র হই? কি হবে যদি পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকে যায়? যদি আমি রিচার্ডকে এটা বলি, তাহলে সে তার দিক থেকে এটা বিবেচনা করবে, এবং বলবে আমি আমার চকলেট সমলাতে পারি না। আমার শূন্যতা আরও বেশি করে আসছিল কারণ আমি বুঝতে পেরেছিলাম যে আমামি যখন আরও খারাপ ভ্রমণে থাকব তখন আমি শুধু একাই থাকব।

কর্তৃত্বপরায়ণ প্রেমিককে ত্যাগ করা

পরের দিন সকালে, আমি অন্যান্য দিনের চেয়ে একটু আগে উঠলাম এবং শুয়ে থাকা অবস্থায় ছাদের দিকে তাকিয়ে থাকলাম। আমি চিন্তা করছিলাম যে এই প্রথমবারের মত আমার সাম্প্রতিক কোন স্মৃতি এতটা তীক্ষ্ণভাবে কাজ এবং বিভ্রান্তির সৃষ্টি করেছে। সবই যেমন জানত আমি সেভাবেই জীবনযাপন করছিলাম। আমি দিনের বিরতির আগ পর্যন্ত অনুষ্ঠানে ব্যস্ত থাকতাম এবং পুলিশ কাহিনীগুলোতে যেগুলো শুধু কল্পনা করা যায় সেই কাজগুলো আমি করছিলাম। অবশেষে আমি নিজেকে এটা বোঝতে সক্ষম হলাম যে আমি আসলে সেই সকালটি ছাড়া এতদিন বিভ্রমের মধ্যে ছিলাম। আমি রিচার্ডকে ডেকে তুললাম এবং বললাম যে আমি কলেজে যাওয়া শুরু করব এবং আমি আর এইভাবে জীবনযাপন করতে চাই না।

রিচার্ড তার নিজের পাশেই ছিল। সে কখনই তার নিয়ন্ত্রণমূলক চাপের মধ্যে আমাকে এতটা দৃঢ় প্রতিজ্ঞ এবং জেদী হতে দেখে নি। আমি আমার লোকজনকে ডাকলাম এবং বললাম যে আমি কলেজে যেতে চাই এবং আগামী কালই আমি তাদেরকে বিদায় জানাব। রিচার্ডের পরিবার ভেবেছিল যে আমি তাকে ছেড়ে যাচ্ছিলাম। হয়ত আমি সেটাই করেছিলাম, কিন্তু হাস্যকরভাবে আমি এই ঘরের চক্ষেশূলের চেয়েও খারাপ অনুভূত করছিলাম। আবারও খালি হয়ে গেল।

আবেগিক কষ্ট, হয়ত আত্নহত্যা

হতাশা আসতে শুরু করল এবং আমি আত্নহত্যার পর্যায়ে পৌঁছেছিলাম। আমি ঈর্ষান্বিতভাবে আমার খাওয়া সিগারেটগুলোর ফিল্টারগুলোকে অষ্টম তলার জানালা থেকে পড়ে যেতে দেখছিলাম, তাদের স্বাধীনভাবে নিচে পড়ে যাওয়ার বিষয়টি আমাকে ঈর্ষান্বিত করছিল। সেই সময়ে আমি আমার কালো চামড়ার ব্যাগটির অন্ধকারের মধ্যে আরওও একটি রেল খুঁজে পাবার আশায় আঁচড় কেটে যাচ্ছিলাম। দয়া করে, আরও একটা লাথি। সকাল শুরু হবার আগে আরও একটু সুখ। আমি মিনতি করছিলাম, খোলাভাবে খাঁচার উপর আঁচড় দিচ্ছিলাম, কিন্তু কেউই আসে নি।

যখন আমার রুমমেট এক সপ্তাহের একটি ওরিয়েন্টেশন থেকে আসল তখন আমি আমার হতাশা থেকে দূরে সরে যেতে থাকলাম। সে দারুণ ছিল, প্রফুল্ল এবং মানুষের সাথে পরিচিত হবার জন্য উৎসাহী ছিল। আমার পঙ্গু দু:খকে এটা তৈরী করেছিল। ক্লাস শুরু হবার প্রথম সপ্তাহে আমরা সমস্ত পার্টিগুলোতে যোগ দিয়েছি। আমি আশা করা চালিয়ে গেলাম যে প্রত্যেকবার বিয়ারের ক্যান খোলার সাথে সাথে আমি আমার শূন্যতাকে পরিপূর্ণ করতে পারব এবং আমার সকল হতাশা দূর হবে। আমি স্বেচ্ছায় এটা মেনে নিতে রাজি ছিলাম না যে প্রত্যেকটা পার্টিই একইভাবে শেষ হবে। আমি এটাকে ভিন্নভাবে উপভোগ করতে চেয়েছিলাম। ‘‘ওহ, বব্বি, তোমার কাছে কি কোন ক্লিপার আছে?’’

ক্লিপার আমার কাঁধের মাঝখানে চিবিয়ে চুলের মাঝখানে পথ চিবিয়ে দেওয়ার সময় আমি গ্রিন্ফ করেছিলাম। চুলের গুচ্ছ আমার কাঁধ এবং বুকে নিচে নামিয়ে দেওয়া। আমি হাঁফ ছেড়ে শুনলাম এবং বুঝতে পারছিলাম যে আমি পতঙ্গ-ফিল্টারড বারান্দার আলোতে উঠোনের সকলকে মজা দিচ্ছিলাম।

‘‘সে সকালে এর জন্য আফসোস করবে,’’ তারা টিটকারি দিয়ে বলল। ‘‘আমি কালকে ওর মুখটা দেখতে চাই,’’ অন্যরা বিয়ার খেতে খেতে গুঞ্জন আকারে বলল। আমি ভেবেছিলাম লোকেরা আমার সাহসিকতা এবং নিজের প্রতি সতেজতা দেখে মুগ্ধ হবে। যখন আমি ভেলক্রো ক্ষুদ্র শক্ত লোমে ঘষা দিলাম তখন আমার দাঁতগুলো আমার মদে ভেজা ঠোঁট থেকে বেরিয়ে ছিল। আমি সবসময়ই আমার হাতদুটোক লোমহীন করতে চেয়েছিলাম। এর আগে আমি আমার বেশ কয়েকজন প্রেমিককেও এই বিষয়ে ধমক দিয়েছি। কিন্তু এখন আমি শেষ পর্যন্ত তা করতে পেরেছি। এটা আমার কাছে বিজয়ের মত মনে হয়েছিল। কীসের বিরুদ্ধে বিজয়, সেটা আমার মাতাল চিন্তা বুঝতে পারল না। আমি শুধু জানতাম যে আমার ভাল অনুভব করার দরকার ছিল।

হতাশা বিজয়ী হতে যাচ্ছিল...

দুই মাস পর, আমার স্ব-সতেজতা নিষ্ক্রিয় হয়ে যেতে লাগল। যদি কেউ আমার বাসায় বেড়াতে আসত তাহলে তারা আমাকে আমার পছন্দের আমার কালো-সূতির কাপড়, বেল্ট-লাগানো, চাপানো প্যান্ট যেগুলো আমার পা দুটোকে আরও বেশি চিকন দেখাতো সেই পছন্দের পোশাকে দেখত। একসময় যে চিকনতা আমার গর্বের কারণ ছিল এখন সেটাই আমার দুর্বলতা হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমার পা দুটো সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠতেও কষ্ট হত। একসময় এর দ্বারা ফুটবল এবং মটরসাইকেল চালানো হলেও এখন এগুলোর কোন আর আগের মত নেই। এমনকি আমার পা দুটো অতিরিক্ত চিকন হয়ে গিয়েছিল। মাদুরে মোড়ানো মেঝেতে অল্পকিছুক্ষণ হাঁটলেও সেগুলো ব্যাথ্যার করণ হয়ে দাঁড়াতো। আমার পায়ের হাড়গুলো মেঝের সাথে লেগে যাওয়ার মত মনে হত। একসময় আমি বাথরুমে যেতেও ভয় পেতাম।

আমার একসময়কার আকর্ষণীয় বক্ষ এখন সংকুচিত হয়ে গেছে এবং আমার চোখগুলো আনন্দহীন হয়ে গেছে। আমি যে গুরুত্বসহকারে কণ্ঠ যেটা আমার একমাত্র বিশ্বস্ত সঙ্গী ছিল, সেটা ছিল ক্যামেল ওয়াইড। আমার ঠোঁট পুরাতন ঠোঁটের আংটি র মাঝখান থেকে মামড়ি হয়ে গেল। আমার আগের রিংয়ের নাভালটি তখন গোলাপী ছিল, যে ক্ষতটি তখনও সেরে ওঠেনি এবং সেটা সংক্রমিত হয়েছিল। শেষ পর্যন্ত আমার নাকফুল তখনও ভালভাবেই ঝুলে ছিল।

আমি জানালার পাশের ঘরোয়াভাবে তৈরী পার্চটিতে সবুজ একটি চেয়ারে কালো পা দুটোকে নির্ভেজালভাবে কাপড় রাখার ড্রয়ারের পাশে বসার জন্য চলে এলাম। আমার দৃষ্টি থেকে আমি অন্য ঘরগুলোকে এবং অন্যান্য শিক্ষার্থীদের হাঁটার সুযোগ পর্যবেক্ষণ করছিলাম। তারা সেখানেই হাঁটছিল যেখানে আমি হাঁটতে চেয়েও হাঁটতে পারতাম না। আমি আমার আমার নিশ্চুপ চিন্তাগুলোর মধ্যে একটি সিগারেট ধরালাম। আমি কি সিগারেট জানালা দিয়ে বাইরে ফেলে দেব?

অপ্রতিরোধ্য আবেগ

আমি এটাই হতে চেয়েছিলাম? আমার সব শক্তি কোথায় গেল? আমি আগে শক্তিশালী ছিলাম। এখন আমার কাঁধ শুকিয়ে গেছে, আমার দৃষ্টি নিস্তেজ হয়ে গেছে। আমার রাতগুলো স্বপ্নহীন হয়ে পড়েছে, আমার এলার্ম ঘড়ি এখন আর সকালে জোরে জোরে বাজে না। আমি আমার খাবার হিসাবে এখন টাকা যোগ করতেও কুন্ঠাবোধ করি নি। ময়লা কাপড়গুলো এত বেশি হয়ে গিয়েছিল যে জমা করার জায়গা ছিল না। ঘরে একমাত্র শক্তিটি ছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের দেওয়া একটি ফ্রিজ যাতে বাসী পিজ্জা ছিল।

আমি নবম তলার জানালা থেকে আমার সিগারেটের ছাই ফেললাম। আমার চোখদু্টো স্বপ্নের ঘোরে সিগারেটটিকে মাটিতে পড়ে যেতে দেখল। আমি সেখান থেকে ফিরে এসে আমার বিছানায় বসলাম। আমি আমার ডায়েরী নিলাম এবং আশাতীতভাবে আমি আমার শূন্যতা থেকে অনেক দূরে চলে যেতে চাই এই বিষয়ে লিখলাম।

লক্ষ্যহীনভাবে লেখা
অর্থহীন শব্দ, সৃজনশীলতাহীন এবং মানশূন্য লেখা
অস্থিরতা
উদ্বিগ্নতা
সতেজতাহীন
ক্ষুধার্ত
গ্রাসকৃত
নির্যাতিত
বুদ্ধিভ্রষ্ট
বিভ্রান্ত
বিচলিত
অন্ধ

আমি আমার ডায়েরীটা রাখলাম এবং বালিশের উপর শুলাম এবং আমার বিষন্ন চিন্তাগুলো থেকে একটু নিরব হতে চাইলাম। আমি আর নতুন কোন ধারণা খুঁজে পাচ্ছিলাম না। আমি শূন্য থেকে শূন্যতর হচ্ছিলাম। কতদিন আর এভাবে চলবে? আমার এই দাঁড় থেকে বের হতে কতটা সময় লাগবে?

কিছু আশা

আমার একমাত্র মিথষ্ক্রিয়া ছিল অন্য লোকদের পরিবার বা বন্ধুদের সাথে চিঠির মাধ্যমে কথোপকথন। আমার প্রিয় চিঠিটি ছিল রডনি এম. এর একজন স্পষ্টবাদী প্রচারক ব্যক্তি, যিনি তাঁর নিজের মন্ডলীর জন্য অপেক্ষারত ছিলেন। এজন্য আমি তাকে সম্মান করতাম। তিনি যা করেছেন সেটা তিনি বিশ্বাস করতেন। পূর্ণবয়স্ক হয়ে আমি তার বোন জামাইয়ের শিশুটিকে নিয়ে যাওয়ার জন্য সাক্ষী হয়েছি। সে তাকে এমনভাবে মানুষ করছিলেন যেখানে তিনি তার ভালবাসার এই শিশুটিকে রাখতে পারবেন কিনা তা নিয়ে সংশয় ছিল। যখন উনি আমার বাবা-মা এর কাছে বেড়াতে আসতেন, তিনি স্বভাবতই ঈশ্বরের দয়ার কথা বলতেন। যখন তিনি কথা বলতেন আমি তার শান্তিপূর্ণ মুখবয়ব এবং আস্থা দেখে মুগ্ধ হতাম।

আমি রডনিকে বেশ কয়েক বছর ধরে দেখি না। তার সেই চিঠিতে তিনি আমার খোঁজ-খবর নিয়েছেন। তিনি আমাকে এটাও বলেছেন যে তার WSU তে কীভাবে তার স্ত্রীর সাথে পরিচয় ঘটেছে। তিনি বলেছেন যদি তারা আমার আশেপাশের কোথাও আসেন তাহলে তারা আমাকে অবশ্যই দেখতে আসবেন। সেই চিঠিটি খুবই উৎসাহমূলক ছিল। তিনি WSU এর সম্বন্ধে বড়বড় কথা এবং প্রলাপ বকছিলেন।

আমি ফিরতি চিঠিতে তাকে লিখলাম যে WSU এখন আর স্মৃতিবেদনাতুর সুযোগসমৃদ্ধ এবং সম্ভাবনাময় জায়গা নেই। তিনি চিঠিতে এটাও উল্লেখ করেছিলেন যে ঈশ্বর কতটা মহান। ওহ, তিনি মহান ঠিক আছে, আমি ব্যঙ্গ করে এটা লিখলাম। আমি যে কতটা দুর্দশাগ্রস্ত এবং ঈশ্বর যে আমার জন্য কিছুই করছেন না এই বিষয়ে আমি রডনিকে বলতে চাইছিলাম। আমি আমার একটা ক্লাসও করছিলাম না আর আমার সাথে যে থাকত সে আমার প্রেমিকের সাথে সম্পর্কে লিপ্ত।

জীবন এবং ঈশ্বরের প্রতি বিরক্ত

আমি তাকে যীশুর সম্পর্কে বলতে শুরু করলাম এবং কীভাবে যীশু, যিনি ঈশ্বরের পুত্র, তিনি আমাকে ছেড়ে দিয়েছেন এবং আমাকে অন্ধকারে ফেলে রেখেছেন তা বললাম। যখন আমি যীশুর নাম লিখতে যাব, তখন আমার মনে ছিল না এর বানানটা কেমন হবে। এটা কি জি-সু হবে> নাকি যী-শু হবে? না, এটাও ঠিক দেখাচ্ছে না। আমি হতাশ হতে শুরু করলাম। আমার অন্তত তাঁর নামের বানান জানা উচিত ছিল। আমি একটি খ্রীষ্টিয়ান ঘরে এবং এই লোকটির সাথে গান করতে করতে বেড়ে উঠেছি। সেই গানের মধ্যে তিনিই কি সেই ব্যক্তি নন যিনি আমাকে ভালবাসেন কারণ বাইবেল আমাকে তা বলে। আমি বিচলিত এবং ভয়াতুর হয়ে পড়লাম। আমার এটা জানা উচিত। যীসু? না।

অবশেষে, আমি আমার সাথে যে থাকত তাকে ডাকলাম এবং জিজ্ঞেস করলাম। সে দ্রুতই আমাকে বলল, যী-শু। যেটা আমাকে ভীত করে তুলল। সে কীভাবে তাঁর নামের বানান করতে পারল আর আমি কেন পারলাম না? দাঁড়াও, এটা মেনে নেওয়া যাচ্ছে না। আমার মনে চিন্তার ঘনত্ব বৃদ্ধি পেতে লাগল। কীভাবে আমি আমার সব দুর্দশার জন্য ঈশ্বরকে দোষারোপ করছি যার নামের বানানটাও আমি জানি না? এতে বোঝা যাচ্ছে আমরা একে অন্যকে চিনিও না, অথবা আমাদের কখনও একে অন্যের কাছে আসা হয় নি। আমি আমার দু:খ-দুর্দশাগুলো শেষ করে সেই চিঠিটি পাঠালাম, সেখানে আমি আমার পাপের জন্য ভুল করে ঈশ্বরকে দোষারোপ করার বিষয়টি উল্লেখ করলাম না।

আমার মনে সেই চিঠিটি লেখার পরে অনবরত এর স্পষ্টতা এবং যুক্তি নিয়ে চিন্তা চলছিল। আমি আর কত লোকদের আমার দুর্দশা এবং দু:খ নিয়ে দোষরোপ করব, যারা আসলে এর জন্য দায়ী ছিল না? তাহলে কি আমি নিজেই আমার দু:খের জন্য দায়ী? আবারও সেই চিন্তাটা আমার মনে আসল। আমি কি তাদের কাছে ব্যর্থ হবার জন্য কোন অযুহাত খুঁজছিলাম। আমি এটা বলার জন্য অপেক্ষা করছিলাম য,‘‘দেখেছ আমি তোমাকে আগেই বলেছিলাম!’’? আপনি বলতে চাচ্ছেন আমি অন্য কাউকে দোষারোপ করতে পারি না! আমি ঈশ্বরকে দোষারোপ করতে পারি না কারণ আমি তাঁর নামের বানানটাই জানতাম না। তাহলে কে বাকি থাকল? আমি?

নিরব। আমার একটা পরিকল্পনার প্রয়োজন ছিল। আমি যেসকল উপায়গুলো জানতাম সেগুলোতে আমি বিরক্ত হয়ে গিয়েছি। আমি প্রথম সেমিস্টারে অকৃতকার্য হয়েছি। ডিসেম্বর মাসে সেমিস্টার শেষ হওয়ার কথা থাকলেও আমি নভেম্বর মাসেই তা প্রত্যাহার করেছিলাম। আমার এই সেমিস্টারটি আর ঠিক করা সম্ভব নয়।

অবশেষে, ভাল একটি উদ্যোগ

আমি উচ্চ বিদ্যালয়ে পড়াকালীন সময়ে যে নার্সিং হোমে কাজ করতাম সেখানেই আবার কাজ করা শুরু করলাম। আমার পদ, ছিল একজন অনুমোদনপ্রাপ্ত নার্সের সহকারী। পশুচিকিৎসা জগতে তাকে একজন পুপার স্কুপার বলা হত। এই ধরণের কাজ আমাকে মানুষের সাথে যোগাযোগ স্থাপনের সুযোগ তৈরী করে দিল। এই দাদু-ঠাকুমারা হুমকিহীন ছিল এবং তাদের আমারই মত ভালবাসার প্রয়োজন ছিল এবং গ্রহণযোগ্যতার প্রয়োজন ছিল। আমরা একে অন্যের জন্য উপযুক্ত ছিলাম।

এই ধরণের কাজে আপনার কোন পছন্দনীয় কিছু থাকা যাবে না কিন্তু আমাদের প্রত্যেকেরই তা ছিল। আমি হেলেন নামক একজন মহিলাকে না ভালবেসে থাকতে পারলাম না। আলঝাইমারদের জীবন্ত মৃত্যু দেওয়ার একটি বাজে উপায় রয়েছে। যখন সেই ব্যক্তি নড়াচড়া, যোগাযোগ, এবং একপর্যায়ে গিলতে না পারবে তার শেষে। আমি ঈশ্বরের সাথে ছোট একটি চুক্তি করলাম।

এখন যেকোন প্রচারক ব্যক্তি আপনাকে এটাকে না করার জন্য বলবে। ঈশ্বরের সাথে চুক্তি করা ভাল কিছু নয়। দেখুন, তাও আমি দরাদরি করেছি। আমি ঈশ্বরকে বললাম যে যদি তিনি সেই মহিলাটিকে তাঁর কাছে নিয়ে নেন এবং কোনরকম যন্ত্রণা ছাড়াই যদি তিনি মৃত্যুবরণ করেন তাহলে আমি তাঁকে আবারও অনুসরণ করা শুরু করব। যখন সেই মহিলাটি আমার ওয়ার্ড থেকে অন্য ওয়ার্ড যেখানে তারা হাঁটতে পারত না এবং তাদের প্রয়োজনে কারও সাহায্য পেত না সেইখানে গেল তখন আমি ঈশ্বরের সাথে এই চুক্তি করেছিলাম। এটাই ছিল আমাদের বাসিন্দাদের শেষ বিদায়।

দুই সপ্তাহ পার হয়ে গেছে। রাতের খাবারের পর যখন আমি একটি সিগারেট খাচ্ছিলাম তখন আমার বদলে যে নার্স ছিল সে দরজার কাছে আসল।

‘‘[নাম], আমি তোমাকে জানাতে চাই যে, হেলেন মারা গিয়েছে।’’

হঠাৎ করেই? আমি আমার সিগারেটটি নেভালাম এবং সেই কক্ষের দিকে গেলাম। আমি তার কক্ষের দিকে উঁকি মারলাম, এবং তার অবস্থা দেখে ভয় পেয়ে গেলাম। কিন্তু, সেই কক্ষটি আলোয় পরিপূর্ণ ছিল। সে খুবই শান্তিতে ছিল। সেবাকর্মী বলল যে সে হেলেনকে খাবারের এক কামড়ের মত দিয়েছিল, তারপর যখন সে অন্য আরেকজনের কাছে গেল, তারপর ফিরে এসে দেখল যে হেলেন আর নেই। সে এত তাড়াতাগি চলে গেল। তাকে বছরের পর বছর সেই ওয়ার্ডে পড়ে থেকে কষ্ট পেতে হল না। সে চলে গিয়েছে না ফেরার দেশে। যেখানে কোন ব্যাথা নেই, কোন কষ্ট নেই। আমার চুক্তির কথা মনে পড়ল।

আমার হিথার নামে একজন ভাল বন্ধু ছিল, যে আমার সাথে আল্জ্হেইমের ওয়ার্ডে কাজ করত। আমার মত সেও জীবনের কেনগুলো নিয়ে সংগ্রাম করছিল। আমি তাঁকে বুধবার সান্ধ্যকালীন গীর্জায় আসার জন্য আমন্ত্রণ জানালাম। সে সানন্দে তা গ্রহণ করল। আমরা দুজনই এই ‘‘ঈশ্বরের কাছে যাওয়া’’ বিষয়টি করার সিদ্ধান্তে একমত হলাম।

আমার দরাদরি চালিয়ে যাওয়া

জো নামে সেই গীর্জায় একজন পালক ছিলেন যিনি সাধারণ একজন মানুষ, তিনি যে কোন কথার মারপেঁচ জানতেন না সেটাও তার নামের সাথে যুক্ত ছিল। তিনি ঈশ্বরের বিষয়ে উৎসাহী ছিলেন এবং লোকেরাও যাতে ঈশ্বরের সান্নিধ্য পেতে পারে সে বিষয়েও উৎসাহী ছিলেন।

তার বক্তৃতা খুবই সহজ ছিল। তিনি বললেন কীভাবে ঈশ্বর আমাদের ভালবাসেন এবং তিনি আমাদের সাথে ব্যক্তিগত সম্পর্ক তৈরী করতে চান। তিনি আমাদের মনে করিয়ে দিলেন যে ঈশ্বরের ভালবাসা পাবার জন্য আমারা তাঁক কিছুই দিতে পারি না। এটা আমার জন্য খবরের মত ছিল না, কারণ আমি সেখানে গিয়েছিলাম কারণ আমার ভেতরে শূন্যতা ছিল। কিন্তু ঈশ্বরের ভালাবাসার এই সূত্রটি জীবনে টেকসই হওয়ার বিষয়ে এই কথাটি শুনতে আমার হৃদয়কে প্রফুল্লিত করছিল। জো যীশু খ্রীষ্টের মাধ্যমে ঈশ্বরের ক্ষমা করার বিষয়টি বলা চালিয়ে গেলেন। ঈশ্বর নিজে যীশুর মাধ্যমে ক্রুশে মৃত্যুবরণ করলেন যাতে আমরা তাঁর সাথে থাকতে পারি।

সেই বিকেলের গীর্জাটি সাধারণ একটা প্রার্থনার মাধ্যমে শেষ হল। জো বললেন,‘‘আমি চাই না আপনারা ঈশ্বরের কাছে কোন প্রার্থনা বা প্রতিজ্ঞা করেন। আমি শুধু চাই যে আপনারা ঈশ্বরের কাছে আপনাদের অন্তর খুলে দিন এবং বলুন,‘‘প্রভু, এই যে আমি।’’ আমি এর সাথে সম্মত হলাম। আমার কাছে দেওয়ার মত কিছুই ছিল না। তখন আমার একটি ভঙ্গচূর্ণ হৃদয় ছিল, ছোট একটি প্রাতিষ্ঠানিক পেশা, প্রেমিকহীন জীবন, এবং আমি বৃদ্ধদেরকে সেবা করতাম। আমি নষ্ট হয়ে যাওয়া পণ্যের মত ছিলাম, কিন্তু আমি যে সমস্যার সৃষ্টি করেছি সেগুলো থেকে বের হওয়ার জন্য আমি ঈশ্বরের কাছে নিজেকে প্রস্তুত করতে চেয়েছিলাম এটা দেখার জন্য যে তিনি আমার এই জীবনে কি করতে পারেন। আমি এই সহজ একটি প্রার্থনা করেছি,‘‘ প্রভু, এই যে আমি। তুমি আমার মধ্য দিয়ে যা করতে চাও তাই কর।’’ আমি আরেকটি চুক্তির জন্য রাজি ছিলাম। আমার হৃদয়ে চরম উষ্ণতা এবং উজ্জ্বলতা প্রবাহিত হচ্ছিল। আমার মনে হল আমি প্রোটিন এর শরবত খেয়েছি। আমার চিন্তার শক্তি বেড়ে গেল। আমি আমার চোখ খুললাম এবং দেখলাম আমার কক্ষটি প্রায় উজ্জলতা ছড়াচ্ছে।

প্রার্থনার পর আমাদের চোখ খোলার আগে, আমাদেরকে বলা হয়েছিল যে আমরা যারা যারা সেই প্রার্থনাটি করেছি তারা যেন হাত উঁচিয়ে ধরি। আমি চুপিচুপি দেখলাম যে হিথার ওর হাত জাগিয়েছে কিনা। আমরা দুজনই একই গোপনীয় উপায়ে হাত জাগালাম। হাঁটুর ওপর কনুই দিয়ে দ্রুত হাত জাগালাম। আমার এতটাই আনন্দ অনুভব হয়েছিল (তারা এটাকে যেভাবে বলে থাকে) যে আমি উঠে গেলাম এবং জো এর সাথে করমর্দন করলাম। আমি তাকে বললাম যে আমি সেই প্রার্থনাটি করেছি এবং তাকে ধন্যবাদ জানাতে চেয়েছি।

গীর্জায় আমার সময়ের মজার বিষয়টি হল এই দিনটি ক্যালেন্ডারে এপ্রিল বোকা দিন হিসেবে পরিচিত ছিল। পুরতান নিয়মে, যেটি বাইবেলের প্রথম অংশ, সেখানে লেখা আছে যে শুধুমাত্র একজন বোকাই বলে থাকে যে তার হৃদয়ে ঈশ্বরের উপস্থিতি নেই। আমি বোকা বনে গিয়েছিলাম।

একটি প্রতিজ্ঞা যাতে আমি নির্ভর করতে পারি

ঈশ্বর অদৃশ্য এবং তাঁকে কল্পনা করার জন্য শুধুমাত্র আমিই বাকী ছিলাম, আমার লেখা জাতীয় কিছুর প্রয়োজন ছিল যাতে আমি তাঁর সাথে এই নতুন সম্পর্কটিকে টিকিয়ে রাখার জন্য মনোবল ধরে রাখতে পারি। যে পদটির সাথে আমি জুড়ে ছিলাম সেটি হল, নতুন নিয়মের প্রথম থিষলনীকীয়। ‘‘মনে রেখো, যিনি তোমাদের ডেকেছেন তিনি নির্ভরযোগ্য; তিনি নিশ্চয়ই তা করবেন।’’

এখন এখানে নির্ভর করার মত কিছু একটা আছে। সেটা দেখতে যতই খারাপ দেখাতে হোক না কেন, ঈশ্বর তাঁর বাক্য, বাইবেলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন যে তিনি বিশ্বস্ত এবং নির্ভরযোগ্য। এইসব যোগ্যতা থেকে আমি অনেক দূরে ছিলাম। আমার আর নিজেকে রক্ষা করার প্রয়োজন ছিল না। তিনিই আমাকে রক্ষা করবেন। এটা এতটা উৎসাহমূলক হওয়ার দ্বিতীয় কারণ হল আমি জানতাম যে আমি আমার ভেতরে কতটা শূন্যতা ছিল। এই পদে ঈশ্বর প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন যে তিনি আমাদের ছেড়ে দেবেন না। তিনি যা শুরু করেছেন সেটাকে শেষ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। সেই চুক্তিটি সীলমোহর করা হয়েছিল।

আমার জীবনের দ্বিতীয় সুযোগটি আমার জীবনের কাজকে সরিয়ে দেয় নি। আমার প্রতিষ্ঠানিক পেশাগুলোতে প্রচুর কাজের সুযোগ ছিল। যখন আমি স্কুল থেক নিজের প্রশংসাপত্রটি প্রত্যাহার করে নিলাম তখন সেখানে ১.০ গ্রেড পয়েন্ট লেখা ছিল।(আমি খুবই আগ্রহী ছিলাম যে ডব্লিউ এস ইউ তে আসার পর তারা প্রশংসা হিসেবে গড়ে ১.০ দেবে কিনা।) আমার উচ্চতর প্রাতিষ্ঠানিক কৃতিত্ত্বের কারণে, আমি অত্যন্ত সম্মানের সাথে শিক্ষার্থী পরামর্শ এবং শিক্ষা কেন্দ্রে যাবার জন্য যোগ্যতাসম্পন্ন হয়েছি। আমাকে বসন্তের সেমিস্টারের সময় ফিরে আসতে বলা হল এবং নিজের কিছু একটা তৈরী করে আসতে বলা হল। আমি নিশ্চিত ছিলাম যে আমি শুধু কার্যবিপত্তি নিয়েই ফিরে আসব।

ঈশ্বর যে আমাকে ভালবাসেন এটা জেনে ,স্কুলে ফিরে যাওয়াটা কঠিন ছিল। অনেক চাপের সম্মুখীন ছিলাম। আমি কাউকে ভালভাবে পর্যবেক্ষণও করতে পারতাম না। তখন সেখানে আমি একটি উদ্দেশ্য এবং অর্থ নিয়ে গিয়েছিলাম। যিনি আমাকে ভালবাসেন তিনি আমার জীবন থেকে কিছু না কিছু চান কারণ আমার জীবনের জন্য তাঁর অনেক পরিকল্পনা রয়েছে। যখন আমি আমার এপার্টমেন্টে ফিরে গেলাম তখন আমি নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারছিলাম (দ্বিতীয় সেমিস্টারে আমি আমি ডর্ম থেকে চলে গেলাম), আমি আমার কক্ষের মধ্যে নিজেকে বন্দী করে রাখলাম এবং সারা সপ্তাহ গাঁজা সেবন করে গেলাম। আমার জীবনটা বিপর্যয় নেমে এসেছিল। এত বছর ধরে আমি মৃত্যুর কথা ভাবছিলাম, আর এখন আমার জীবন নিয়ে ভাবতেই কষ্ট হচ্ছে।

আমি জীবনের এক নতুন পথ খুঁজে পেলাম

আমি বুঝতে পারলাম যে অন্ধকার আমাকে ঘিরে ধরেছে। এটা অনেক ভারী ছিল। শ্বাসকষ্টের মত ছিল। আমি চুপ থাকতে পারলাম না এবং আমি কোন কিছু শুরু করতেও পারলাম না।

আমার চিন্তাগুলো হঠাৎ করেই থেমে গেল। দাঁড়াও। আমার আর এই চিন্তাগুলো করা উচিত নয়। ঈশ্বর আমাকে আমার পাপ থেকে মুক্ত করেছেন। আমার হঠাৎ বাইবেল থেকে একটি ঘটনার কথা মনে পড়ল যেখানে ব্যাভিচারী মহিলাকে ঘুমের মধ্যে দোষারোপকারী পুরুষদের দ্বারা টেনে নিয়ে যাওয়া বোঝায়। দোষারোপকারী পুরুষেরা সমাজের ধর্মীয় ব্যক্তিত্ব ছিল যারা যীশুকে এটা পরীক্ষা করার জন্য বলেছিল এবং কীভাবে তিনি তাদের প্রশ্নের উত্তর দেন সেটা দেখতে চেয়েছিল।

তারা তাঁকে চ্যালেঞ্জ করল,‘‘ আইন-কানুনে মোশি এই ব্যাভিচারীণী স্ত্রীলোকদের পাথর ছুঁড়ে মেরে ফেলতে আমাদের আদেশ দিয়েছেন।’’ তাদের নিন্দাপূর্ণ কথাগুলো তাদের হাতে ধরে থাকা পাথরের ধূলোগুলো বাতাসের সাথে মিশে যায়। সেই মহিলাটি মাটিতে ফুঁপিয়ে কাঁদছিল। যীশু শান্তভাবে নিচু হলেন এবং মাটিতে আঙ্গুল দিয়ে লিখতে থাকলেন। লেখার পর যীশু উত্তর দিলেন,‘‘ আপনাদের মধ্যে যিনি কোন পাপ করেন নি তিনিই প্রথমে ওকে পাথর মারুন।” তিনি আবারও মাটিতে লিখতে থাকলেন, এবং প্রত্যেক ব্যক্তির হাত থেকে পাথর নিচে পড়ে যাওয়ার শব্দ শুনতে পেলেন যা এটা প্রমাণ করে যে যাদের হাতে সেই পাথরগুলো ছিল তাদের মধ্যেও পাপ ছিল এবং তারা সেই মহিলাটিকে যে শাস্তি দিতে চাচ্ছিল তারাও সেই শাস্তির যোগ্য।

সেই মহিলাটি, কিছুটা বিভ্রান্ত হল এবং সে যে পাপ করেছে সেটা নিয়ে যীশু তার সাথে কেমন আচরণ করেন সেটার আশায় ছিল।

তিনি জিজ্ঞেস করলেন,‘‘তাঁরা কোথায়? কেউ কি তোমাকে শাস্তির উপযুক্ত মনে করেন নি?”

মহিলাটি উত্তর দিল,‘‘ তাদের কেউই এখানে নেই।’’

‘‘যাও আর পাপের জীবন কাটায়ো না।’’

মহিলাটি প্রথম যে বিষয়টি উপলব্ধি করতে পারল যে, শুধুমাত্র সে নিজেই পাপী নয়; আর দ্বিতীয় বিষয়টি হল যীশু তাকে একটা পাথরও নিক্ষেপ করেন নি।

যীশু যে একটি পাথরও নিক্ষেপ করেন নি এতে কী বোঝা যায়? সেখানে শুধুমাত্র যীশুরই সেই মহিলাটিকে পাথর মারতে পারতেন। শুধুমাত্র তিনিই নিষ্পাপ ছিলেন। নিজে ঈশ্বর হয়ে মাংসে মূর্তিমান যীশুই নিখুঁত ছিলেন। ঈশ্বরীয় স্বত্ত্বা হওয়ার কারণে শুধুমাত্র তারই পাপের ক্ষমা এবং পাপের বিচার করার অধিকার ছিল। তিনি বলেছেন, যার কোন পাপ নেই সেই পাথর মারুক। এর দুইটি আঙ্গিকে অর্থ রয়েছে। এটা বলে তিনি মহিলাটিকে দোষারোপ করা লোকদেরকে বোঝাতে চেয়েছেন, কিন্তু সেখানে তিনিও নিষ্পাপ ছিলেন, তারপরও তিনি সেই মহিলাটিকে শাস্তি দেন নি।

আর কোন দোষ, বা শূন্যতা নেই

যীশুই সেই ব্যক্তি যিনি বলেছেন,‘‘ আমিও তোমাকে দোষারোপ করি না। আর পাপ কোরো না এবং মন পরিবর্তন করে আমার দিকে ফের।’’ আমি নিজেও আর পাপ না করার চেষ্টা করছিলাম, কিন্তু আমি এই সত্যটিকে ভুলে যেতে শুরু করেছিলাম যে যদি যীশু আমাকে দোষারোপ না করেন, তাহলে কে আমাকে দোষারোপ করবে? কেউই না। জীবনটা এমন নয় যে সেটা মৃত্যুর পাশ দিয়ে যাবে। জীবনের অপ্রত্যাশিত কষ্ট এবং হতাশাগুলোর জন্য আমাদের আংশিকভাবে পঙ্গু হয়ে পড়া উচিত নয়। খ্রীষ্টের মাধ্যমেই আমাদের আশা আছে।

অন্তরের যেকোন সমস্যার সামাধান হল যীশুর সাথে সম্পর্ক স্থাপন। কারণ তিনি জীবন্ত, তিনি আমাকে জীবন দিয়েছেন। যে চরিত্রটি আমাদের রক্ষা করে তা হল ঈশ্বরের বিশ্বস্ততা এবং বিশ্বাসযোগ্যতা। তিনি আমাকে অনারোগ্য শূন্যতায় পড়তে দিয়েছেন এই কারণে যাতে আমি দেখতে পারি তিনি নিজেই সেই সমাধান।

তবুও আমি আমার শারীরিক অবস্থার জন্য সংগ্রাম করছিলাম। আমি তখন এটা বিশ্বাস করার চেষ্টা করছিলাম যে ঈশ্বর আমাকে নি:শ্বর্তভাবে ভালবাসেন। আমি আমার অন্তরকে সহজ করে নিলাম এটা বুঝতে পেরে যে, যাই ঘটুক না কেন ঈশ্বর আমাকে ভালবাসেন। আমি এই বিষয়টি পুরোপুরিভাবে ধারণ করতে পারি নি। আমি ভয়ে ভয়ে ওজন বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা করি। তখনও আমি ভালভাবে খাওয়া-দাওয়া করছিলাম না, কারণ স্পিড নেওয়া বন্ধ করার পর তখনও আমার পঞ্চাশ পাউন্ড ওজন বেড়ে গিয়েছিল।

যদিও জীবনে চলার পথটি যন্ত্রণাপূর্ণ ছিল, তবুও আমি জীবনের শূন্যতাকে বাদ দিয়ে জীবনকে উপভোগ করতে পারছিলাম, এটা শুধু একদিনের জন্য নয়, কিন্তু ঈশ্বরের সাথে এখন থেকে অনন্তজীবনের জন্য। আহ! ঈশ্বরের লোকেরা এই অনুভূতির কথাই বলেছেন। যিনি নিজের সর্বোচ্চটা দিয়েছেন যাতে শুধুমাত্র আমরা আমাদের জীবনকে সবচেয়ে ভালভাবে উপভোগ করতে পারি, আমরা যাতে অনবরত চলতে থাকে আবেগীয় কষ্টগুলো থেকে মুক্তি লাভ করতে পারি। ইনিই সেই ব্যক্তি যার সাথে আমি আপনাকে পরিচয় করিয়ে দিতে চাই। এই ব্যক্তিটি হলেন, যীশু খ্রীষ্ট, তিনি আমাকে জানালার পাশে থেকে সিগারেটের প্রতি মনোযোগ দেওয়া থেকে মুক্তি দিয়েছেন। যারা তাঁর কাছে স্বেচ্ছায় আসতে চায়, তাদেরকে তিনি বলেন,‘‘ আমার কাছে আস।’’

কীভাবে আপনি তাঁকে জানতে পারেন এই বিষয়ে যদি আপনি দেখতে চান তাহলে, এখানে যান, ব্যক্তিগতভাবে ঈশ্বরকে জানা

 কিভাবে ঈশ্বরের সাথে একটা সম্পর্ক শুরু করেন
 আমার একটি প্রশ্ন বা মন্তব্য আছে…

এই প্রবন্ধটি শেয়ার করুন
WhatsApp Share Facebook Share Twitter Share Share by Email More